মুসলমানদের চ্যালেঞ্জ এখন দুটি। একটা ভেতরকার, আরেকটা বাইরের।
ইসলামের বাইরের নানা পক্ষ থেকে আসা চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কমবেশি অনেকেই সচেতন। কথাবার্তা যা হয়, মোটামুটি সেসব নিয়েই হয়। কিন্তু মুসলমানদের নিজেদের ভেতরকার যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়ে আছে, সেসব নিয়ে কথাবার্তা তেমন একটা হয় না। হলেও তা পাবলিক স্ফিয়ারে তেমন একটা আসে না।
দীর্ঘদিনের চর্চার ফলে ইসলামের নামে এমন কিছু ভুল ব্যাপার সমাজে গেড়ে বসেছে, যেগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলাকেই রীতিমতো ‘অনৈসলামী’ কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন ধরেন, রমজান মাসে গভীর রাত থেকে সেহরীর শেষ সময় পর্যন্ত মাইক বাজানো, ইফতারীর আগেও একই কাজ করা, শীতকালের বিরতিহীন ওয়াজ সার্ভিস ইত্যাদি। এসব কাজের ফলে সাধারণ মানুষ অনেক ভোগান্তি পোহালেও ইসলামের সাইনবোর্ড থাকায় কিছু বলার সাহস পায় না।
আবার ধরেন, জনসংখ্যার মোটামুটি অর্ধেক হলো নারী। এই বিপুল সংখ্যক নারীদের ব্যাপারে কঠোর রক্ষণশীল মনোভাব, এমনকি মসজিদে পর্যন্ত তাদেরকে ঢুকতে না দেয়াটা ইসলামের নামেই জায়েজ করা হয়। যদিও ব্যাপারটা নিছক স্থানীয় কালচারাল কনস্ট্রাক্ট অনেক ক্ষেত্রে।
এভাবে তালিকা আরো দীর্ঘ করা যাবে। কিন্তু এই সমস্যাগুলোর গোড়া হলো ইসলামের সঠিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং না থাকা। না, আমি সালাফী-লিটারেলিস্টদের তথাকথিত ‘সহীহ’ ইসলামের কথা বলছি না। আমি বলতে চাচ্ছি, ইসলামের যে মূল বক্তব্য (এসেন্স), সেটা আমাদের মধ্য থেকে হারিয়ে গেছে। এর পরিবর্তে কিছু রুলস-রেগুলেশন সময়ের ধারাবাহিকতায় বিবর্তিত হতে হতে ক্ষেত্রবিশেষে ইসলামের প্রিন্সিপালের বাইরে গিয়ে হলেও সমাজে গেড়ে বসেছে।
ইসলামের মর্মবাণীর দিকে পুনরায় ফিরে যাওয়াই হলো এর সমাধান।